কুমিল্লা প্রতিনিধি
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মাত্র সাত দিন আগে মেয়ে সন্তানের বাবা হয়েছেন । কিন্তু সন্তানকে দেখে, তাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করতে পারেনি তিনি। কিন্তু খুব শিগগিরই ছুটি নিয়ে সদ্যজাত মেয়েকে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই চির ছুটিতে চলে গেলেন তিনি।
শনিবার (৪ জুন) রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারিতে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হন মনিরুজ্জামান।
সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মনিরুজ্জামানের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের নাইয়ারা গ্রামে। তিনি গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুল হকের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসে ফায়ার ম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মেম্বার জয়নাল আবেদীন জানান, মনির বরিশালে বিয়ে করেন। স্ত্রী থাকেন বরিশালে বাবার বাড়িতে। এক সপ্তাহ আগে তাদের এক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। এটিই এই দম্পতির প্রথম সন্তান। ছুটি পেলে মেয়েকে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু আল্লাহর কি খেলা! অবুঝ শিশুটিকে একবার কোলেও নিতে পারলো না সে!
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন জানান, মনিরুজ্জামানের মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। বিস্তারিত জেনে আমাদের পক্ষ থেকে যে ধরনের সহায়তা দরকার, তা করা হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৩২ জন। নিহতদের মধ্যে ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও ৫ জন ফায়ার সার্ভিসের সদস্য রয়েছে। এছাড়াও, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৮৫ জনেরও ওপরে।
ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের মোট ১৮৩ জন কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন।