নেকবর হোসেন: কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা নগরীর পুরাতন চৌয়ারা বাজার এলাকায় যুবলীগ কর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরী ওরফে জিলানী হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ২ বছর পর আরমান হোসেন (২৮) নামে এক ঘাতককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)। মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতারের পর বুধবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন রীমার আদালতে প্রেরণ করা হলে সে জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে আরো ৮ জনের নাম প্রকাশ করেছে। তিনি জেলার উলুরচর গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের ছেলে।
পিবিআই জানায়, নগরীর চৌয়ারা গরু বাজার ছাড়াও রাজনৈতিক কারণে স্থানীয় যুবলীগকর্মী জিল্লুর রহমান চৌধুরী ওরফে জিলানীর সাথে আসামীদের বিরোধ চলে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামি আরমান উক্ত গরুর বাজারে দীর্ঘদিন যাবত ডিউটিম্যান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আরমান জানিয়েছে- ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর সকাল ৭টার দিকে পুরাতন চৌয়ারা বাজারের একটি দোকানের পার্শ্বে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আরমানসহ ঘাতকরা জিল্লুর রহমান চৌধুরী জিলানীকে এলোপাতারী কুপিয়ে ডান ও বাম হাতসহ দুই পায়ের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক কাটা জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে এদিন সকাল ৮টার দিকে তিনি মারা যান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই-কুমিল্লার পরিদর্শক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ জানান, গ্রেফতার আরমান এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি না হলেও হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সে আত্মগোপনে ছিল। তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডে তার সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সম্প্রতি সে এলাকায় এসে বিচরণ করতে থাকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলায় গ্রেফতার আরমানকে বুধবার আদালতে প্রেরণ করা হলে সে জিলানী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে এবং কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয়া অপর ৮ জনসহ পরিকল্পনাকারীদের নাম প্রকাশ করেছে। জবানবন্দির কপি পেলে পলাতকদের গ্রেফতার করা হবে। মামলার বাদী ইমরান হোসাইন চৌধুরী জানান, আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হয়েছে। আগে যারা গ্রেফতার হয়েছেন তারাও জামিনে রয়েছেন। পিবিআই নতুন করে আরমানকে গ্রেফতারের পর আরো ৮ ঘাতকের নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। আশা করি পিবিআই শিগগির তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে এবং আমরা হত্যাকান্ডের বিচার পাবো।
এর আগে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর সকালে যুবলীগকর্মী জিলানীকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ইমরান হোসাইন চৌধুরী বাদী হয়ে ২৪ জনকে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।