কুমিল্লায় বিএনপি-জামায়াতের ডাকা একদিনের হরতাল ও তিন দিনের অবরোধ চলাকালে পিকেটিং, সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মোট ২২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১০৪ জনকে। এই সময়ে জেলায় মোট পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইওওয়ান সৈয়দ ফজলে রাব্বি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,হরতাল চলাকালে নগরীর চকবাজার এলাকায় সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সদস্য সচিব ছাড়া অন্যান্য শীর্ষ পর্যায়ের ৩০ নেতার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এরপর অবরোধ চলাকালে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা- সিলেট সড়ক, কুমিল্লা- চাঁদপুর সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা, ভাঙচুর এবং পিকেটিংয়ের অভিযোগে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা, দাউদকান্দি, দেবীদ্বার, সদর দক্ষিণ, ব্রাহ্মণপাড়া, বরুড়া এবং নাঙ্গলকোটসহ অন্যান্য থানায় আরো ২১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এসব মামলায় নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত হিসেবে বিএনপি’র ৭ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন দুপুরের আগে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সংঘাতে প্রাণ যায় যুবদলের মুগদা থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা শামীম মোল্লার। সংঘর্ষের মধ্যে হওয়া সমাবেশ থেকেই পরদিন সারাদেশে হরতালের ডাক দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৯ অক্টোবর সেই হরতালের সকালে গুলশানের বাসা থেকে ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাতে বেশ কয়েকজনের প্রাণ গেছে, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে কয়েক ডজন যানবাহন ও স্থাপনা। তিন দিনের অবরোধ শেষে দুই দিনের বিরতি দিয়ে রোববার ভোর থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার জন্য একই কর্মসূচি দিয়েছে সরকারের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি