নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর দীর্ঘ ১৮ বছর পর মঙ্গলবার (৮ মার্চ) কার্যকর হতে যাচ্ছে শফিউদ্দিন হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত শিপন হাওলাদার ও নাইমুল ইসলাম ইমনের। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে তাদের ফাঁসি কার্যকর করার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ।
মামলার অভিযোগ পত্র ও কারাগার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ছিলেন শফিউদ্দিন। এছাড়াও তিনি স্থানীয় রেলওয়ে আমবাগান এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়কও ছিলেন। এছাড়াও জড়িত ছিলেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের রাজনীতির সাথেও। এলাকায় সন্ত্রাসী
কর্মকাণ্ড,মদ, জুয়া ও রেলওয়ের অবৈধ সম্পদ দখলের প্রতিবাদে শফিউদ্দিন সোচ্চার থাকার কারণে রেলওয়ের জায়গা থেকে চার দফায় অবৈধ বস্তি ও কলোনি উচ্ছেদ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এসব ঘটনার জেরে সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ীম ২০০৩ সালের ১৪ জুন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার সরকারি বাসায় ঢুকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে শফিউদ্দিনকে। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে বোমা ফাটিয়ে এলাকা ত্যাগ করে ঘাতক দল।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এ হত্যা মামলায় দুই ঘাতক শিপন ও ঈমনকে ফাঁসি ও অপর সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দেন। সাজার বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছিল। কিন্তু ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত তাদের রিভিউ খারিজ করে দেয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদন করা হলেও তা খারিজ হয়ে যায়।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, উচ্চ আদালতে ফাঁসির সাজা বহাল রাখা এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে কারা বিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হয়। এ ছাড়াও কারা বিধি অনুসারে অন্যান্য আরও কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই ফাঁসি কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফাঁসি কার্যকরের আগে উভয়ের পরিবারের লোকজন তাদের সাথে দেখা করেছেন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সকালে পরিবারের সদস্যরা তাদের দুই জনের সাথে শেষ দেখা করবেন। রাতে উভয়ের ফাঁসি কার্যকরের পর মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।