কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা সিটিকে সুশৃঙ্খল ও বাসযোগ্য করতে সঠিক পরিকল্পনা এখানে প্রয়োজন। আইন না মেনে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, যত্রতত্র গড়ে উঠা অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড বন্ধ করা, যানজট নিরসনে সড়কগুলো প্রশস্তকরণ ও পানি অপসারণের জন্য ড্রেনগুলো সঠিকভাবে সংস্কার করতে হবে। না হলে ধীরে ধীরে কুমিল্লা তার ঐতিহ্য হারাতে থাকবে; হয়ে পড়বে বসবাসের অযোগ্য।
সোমবার (২৭ জুন) বিকালে কুমিল্লায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্ত অংশীজনের অংশগ্রহণের বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে অবহিতকরণ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের অতীন্দ্র মোহন রায় সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম।
সভায় বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েম ভূঁইয়া, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জহিরুল হক দুলাল, সাপ্তাহিক অভিবাদন সম্পাদক আবুল হাসানাত বাবুল, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন কুমিল্লার সভাপতি আলহাজ্ব শাহ মো. আলমগীর খান, বদরুল হুদা জেনু, নারী নেত্রী পাপড়ি বসু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে সিএনজি অটোরিকশার স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাস নগরীতে প্রবেশ করে। ফলে প্রধান সড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। অবৈধ স্ট্যান্ড অপসারণের কথা বারবার বলা হলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ ছাড়া নগরীর সড়কগুলো সংকুচিত করে, ড্রেনগুলো দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলো অপসারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। ফলে কুমিল্লা নগরীর দিন দিন বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।
কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসানাত বাবুল বলেন,নগরীতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও সবই পরিকল্পনাহীন। এক সময়ের ব্যাংক ও ট্যাংকের শহর কুমিল্লার অসংখ্য দিঘি ও পুকুর ভরাট করে ফেলা হয়েছে। নগরজুড়ে যানজটে নাকাল মানুষ। সিএনজি, রিকশা, ইজিবাইকের লাগামহীন চলাচলে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নগরীতে কী পরিমাণ রিকশা-ইজিবাইক চলবে তা নির্ধারিত থাকতে হবে। এর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। সুন্দর নগর গড়তে সুন্দর পরিকল্পনা প্রয়োজন। কুমিল্লায় সেরকম পরিকল্পনা হয়নি। আশা করি, সিটি করপোরেশনের নতুন নির্বাচিত পরিষদ এ বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
নগরীর সবকিছুতেই পরিকল্পনাহীনতার উদাহরণ টেনে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জহিরুল হক দুলাল বলেন, সিটি পার্কে (নগর উদ্যান) ঢুকলে এটাকে বাজার বলে মনে হয়। পার্কের ভেতরে কেবল দোকান আর দোকান। এর একটা সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। সিটি পার্ক কি বাজার থাকবে?
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, নগরজুড়ে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো ভাঙা জরুরি। না হয় মানুষের কাছে ম্যাসেজ যাবে না। তারা মনে করবে আইন ভাঙলে কিছু হয় না। নিয়মবহির্ভূত স্থাপনা নির্মাণে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, শহরজুড়ে যে অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে- এ বার্তা আমরা পেয়েছি। মেয়র-কাউন্সিলররা চাইলে অবৈধ স্ট্যান্ড থাকবে না। সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত পরিষদ চাইলে পরিবর্তন সম্ভব।