কুমিল্লা- ব্রাক্ষনবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নতকরণের লক্ষ্যে সড়কের দু’পাশের শত শত গাছ কেটে সড়কের উপরই ফেলা হচ্ছে। ফলে সৃষ্ট যানজটে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকা হাসপাতালগামী রোগি, যাত্রী ও জরুরী পন্যবহনকারী পরিবহন পড়ছে সীমাহীন দূর্ভোগে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারী) দিনভর কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের অংশ কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের দেবীদ্বার পৌর এলাকার ‘আলহাজ্ব জোবেদা খাতুন মহিলা বিশ^বিদ্যালয় কলেজ’র সামনে সড়কের দু’পাশের বড় বড় গাছগুলো কেটে সড়কের উপর ফেলায় চাপানগর সাইলচর, বড়আলমপুর ও পান্নারপুল থেকে দেবীদ্বার সদর, বানিয়াপাড়া, বারেরা, ভিড়াল্লা ষ্ট্যাশন পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। নিরাপত্তা বেষ্টুনি ছাড়া এবং দু’পাশে লাল পতাকা উচিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকে কুমিল্লা ময়নামতি থেকে সড়কের দু’পাশের বড় বড় গাছগুলো কেটে সড়কের উপর ফেলায় ওই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানাযায়, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর ‘ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের’ (এলওসি) সহায়তায় (একনেকের সভায়) কুমিল্লার ময়নামতি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধরখার পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত। ৫৪ কিলোমিটার সড়কটি উন্নয়নে ব্যয় হবে ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। সরকারের পরিকল্পনা কমিশন বলছে, সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের মাধ্যমে দ্রুত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত হবে।
কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কটির চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। নির্মাণ ব্যয়ের ২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা ঋণ সহযোগিতা দেবে ভারত। বাকি ৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা জোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, কুমিল্লা (ময়নামতি)-ব্রাহ্মণবাড়িয়া (ধরখার) জাতীয় মহাসড়ককে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সমন্বিত উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের মধ্যে দ্রæত, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হবে।
এ ব্যপারে বনবিভাগ মুরাদনগর কার্যালয়ের ‘রেঞ্জ বনকর্মকর্তা’ আব্দুল মতিন জানান, নেত্রকোনা এবং কিশোরগঞ্জ জেলার দু’জন ঠিকাদার দরপত্রে পেয়েছেন। তারা চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের শুরু থেকে প্রথমে বড় বড় গাছগুলো কেটে ফেলছেন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী থেকে বাকী গাছগুলো কেটে নিয়ে যাবেন। এসময়ে গাছ কেটে সড়কে ফেলে যানজটের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছি। যানজট নিরসনে আগামীকাল (শুক্রবার ২৬ জানুয়ারী) দুই ঠিকাদারকে আসতে বলেছি। তারা যেন কাটা গাছগুলো রসির সাহায্যে সড়কের বাহিরে ফেলেন সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি। সড়কে পড়া গাছগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। এ ব্যপারে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিতী চাকমা এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সওজ) মোহাম্মদ জাফরুল হায়দারের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে সওজ কুমিল্লা বিভাগীয় সার্কেল তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার জানান, কুমিল্লা-ব্রাক্ষণবাড়িয়া সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরনের কাজ এখনো শুরু হয়নি, এটা দির্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। এর পূর্বে সড়কের দু’পাশের গাছগুলো কেটে সরাতে হবে। এ বিষয়ে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ভালো বলতে পারবেন।