কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার তিতাসে স্কুল ছাত্রী অপহরণের পর ৫০লাখ টাকা মুক্তিপন দাবির অভিযোগ উঠে।
ডিবি পুলিশের তৎপরতায় ঘটনার ৬দিন পর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গতকাল (শনিবার) রাত ১২টার দিকে দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজার থেকে কুমিল্লা (ডি.বি) পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩জনকে আটক করে।
আটকৃতরা হলো, তিতাসের বৈদ্যারকান্দি গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে মো. ভাসানী, মো. আনিছ ড্রাইভার ও তার স্ত্রী বিউটি আক্তার প্রকাশ আমেনা।
ভিকটিম ওই কিশোরী উপজেলার কেশবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ও একই গ্রামের মাইনুদ্দিনের দ্বিতীয় মেয়ে।
গত ১আগস্ট বাসা থেকে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হন এবং ঘটনার ৩দিন পর পিতা মাইনুদ্দিন ও চাচা নাছির উদ্দিনের নিকট মোবাইল ফোনে ৫০লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
তবে এ ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি। পুলিশ জানায় ভিকটিমের পরিবার অভিযোগ না দেয়ায় আমরা মামলা নিতে পারিনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কেশবপুর গ্রামের মাইনুদ্দিনের ছোট মেয়েকে তার খালাতো ভাই আপন ও তার বড় বোন মুন্নীর যোগসাজশে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখে।
২ আগস্ট ভিকটিমের পরিবার বিষয়টি থানা পুলিশকে জানায় এবং একটি সাধারন ডায়েরী করেন।
এরপর পুলিশ রহস্য উদঘাটন ও ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টায় অভিযান চালায়। এরই মধ্যে একটি গ্রামীন ফোন নাম্বার থেকে ভিকটিমের বাবা ও চাচার কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে একাধিক ফোন আসে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন রুমির (ছদ্ম নাম) পরিবারের সদস্যরা। জেলা পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় তিতাসের বৈদ্যারকান্দি গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে ভাসানি, আপনের বাবা মো. আনিছ ড্রাইভার, আপনের মা বিউটি বেগম প্রকাশ আমেনাকে সাথে নিয়ে অভিযানে নামে।
তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ও মূল পরিকল্পনাকারী আপনের মা বিউটি বেগম প্রকাশ আমেনা ও বোন তাহমিনা আক্তার অপি’র মাধ্যমে দাউদকান্দির গৌরীপুর এলাকার একটি বাসা থেকে ডিবি পুলিশ শনিবার ৬ আগষ্ট রাত ১২টার দিকে উদ্ধার করে।
তবে এবিষয় কোন মামলা না হলে গতকাল রবিবার দুপুরে থানায় উভয় পরিবারের লোকজন আপোষ মিমাংশা করে এবং ঘটনায় জড়িতদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।
ভিকটিমের চাচা নাছির উদ্দিন জানান, আমার বড় ভাতিজি মুন্নী ও তার খালাতো ভাই আপন তার মা ও বন্ধুদের সহযোগিতায় কৌশলে আমার ছোট ভাতিজিকে অপহরণ করে এবং আমাদের নিকট আপন ও তার বন্ধু ভাসানী ৫০লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমি ডিবি পুলিশের সহযোগীতা কামনা করলে, তাদের সহযোগীতায় আপনের মা ও তার বোনের মাধ্যমে আমার ভাতিজিকে গৌরিপুর বাজার থেকে আমারা পাই। আমার বড় ভাতিজি ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় আমার ভাই মামলা করেনি।
কুমিল্লা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইফতেখার উদ্দিন জানান, তিতাস থানার একটি নিখোঁজ ডায়েরির সূত্র ধরে আমরা ডিবি পুলিশ অভিযান চালাই। ভিকটিমের খালাতো ভাই আপনের সাথে যোগাযোগ করে তার মা বোনের মাধ্যমে ভিকটিমকে আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়। ভিকটিমের সাথে কথায় যা বুঝতে পেরেছি তার বোন ও খালতো ভাইয়ের সাথে মিলে সে স্বেচ্ছায় লুকিয়ে ছিলো এবং পরিবারের কাছ থেকে কিছু টাকা নেওয়ার চেস্টা করেছিলো।
তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, জিডির আলোকে ভিকটিমকে ডিবি পুলিশের সহযোগীতায় গৌরিপুর বাজার থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিকটিম নিখোঁজের পর তার বাবার কাছ থেকে টেলিফোনে টাকা চেয়েছিলো এটা সত্য। যেহেতু সবাই একই পরিবারের তাই ভিকটিমের পরিবার মামলা করতে চাচ্ছে না।