মোঃ জুয়েল রানা: তিতাস কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা তিতাস উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আধ্যাত্বিক পাগল মরহুম হাজ্বী আমির হোসেন অরফে বিষা পাগলার ঘরে পাওয়া গেছে ২ কোটি ৪৫ লাখ নগদ টাকা, বিভিন্ন ধরনের বিদেশি মুদ্রা ও প্রায় ৫ ভরি স্বর্ণসহ একটি আইফোন মোবাইল।
বুধবার (১৩ জুলাই) সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মরহুম বিষা পাগলার ওয়ারিশ ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে তার ঘর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে ৫৫ বছর বয়সে আধ্যাত্বিক পাগল বিষা পাগলা তার নিজ বাড়িরর বিল্ডিংয়ে স্বাভাবিক মৃত্যু বরন করেন। মৃত্যুকালে তার ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী কিছুই ছিলো না। তাই তার আত্মীয়রা তাকে তার ক্রয়কৃত ৩০ শতাংশ জমিতে দাফন করে। দাফনের পর থেকে গত কয়েকদিন ধরে বিষা পাগলার আত্মীয়রা সন্দেহ করছিলো তার ঘরে থাকতে পারে টাকা পয়সাসহ স্বর্ণালংকার। এমন সন্দেহ থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে তার ওয়ারিশদের সামনে রেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তার ঘরের সিন্ধুক খুলে দেখে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এমন খবর মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পরলে তার বাড়িতে জমায়েত হয় হাজার হাজার মানুষ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা। এবং খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় তিতাস থানার পুলিশ। পরে উক্ত টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র উপস্থিত সকলের সামনে বস্তা বন্দী করে মরহুম বিশা পাগলার বিল্ডিংয়ের একটি রুমে তালা বদ্ধ করে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়। পরের দিন বুধবার পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীরা টাকা গুলো গননা করে ওয়ারিশ হিসেবে তার বড় ভাই আওলাদ হোসেন, ছোট ভাই জামাল হোসেন, বোন মোর্শেদা, পালক মেয়ে তাসলিমা ও ভাতিজা মিঠুর কাছে বুঝি দেয়।
এসময় মহসিন এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম সোহেল সিকদার, কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সারওয়ার হোসেন বাবু, কড়িকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মুরাদ, বলরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুর নবী, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ ফকির, কাজী কবির হোসেন সেন্টু, আতিক, ওহিদ মাস্টার ও রমজান মেম্বারসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এবিষয়ে মরহুম বিষা পাগলার বড় ভাই আওলাদ বলেন, আমার ভাই একজন আধ্যাত্বিক পাগল ছিলো তার কাছে অনেক দুর দুরান্ত থেকে মানুষ আসতো এবং মানুষও তাকে ভালোবেসে টাকা-পয়সা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে জাইতো। এগুলো সে জমিয়ে রাখতো কিন্তু মৃত্যুর পর তার ঘরে এতো টাকা পাওয়া যাবে আমরা কল্পনা করতে পারি নাই। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, জীবিত থাকতে আমার ভাইয়ের স্বপ্ন ছিলো রাস্তার পাশে একটি মসজিদ করার। কিন্তু সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ার আগেই সে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে। এখন আমরা আমার ভাইয়ের রেখে যাওয়া টাকা দিয়ে একটি মসজিদ, মাদ্রাসা ও একটি মাজার তৈরি করবো।
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গাজীপুর গ্রামে মৃত বিষা পাগলা নামে এক পাগলের ঘরে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়ার খবর পেলে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই এবং পুলিশের হেফাজতে টাকা গুলো উদ্ধার করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীরা তাদের ওয়ারিশদের হাতে বুঝিয়ে দেয়।