এ আর আহমেদ হোসাইন
সনাতন ধর্মাবলম্বীেদর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে দেবীদ্বারে মৃৎশিল্পীর কারিগরদের নিপূণ হাতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কয়েক দিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়। (৩০) সেপ্টেম্বর শনিবার
দুপুরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ দেবীদ্বার উপজেলা শাখার সভাপতি ও প্রভাবশালী আওয়ামীলীগের সদস্য জীবন চন্দ্র দাস জানান, এ বছর পূজায় পুরো উপজেলায় মন্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে মোট দাড়িয়েছে ৯৫ টি।
তিনি বলেন- প্রতিটি মন্দরে সৌহার্দ্য ও সম্প্রতির মধ্যদিয়ে দূর্গোৎসব পালনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাঁদামাটি, খড়, বাঁশ এবং সুতলি দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমার র্পূণ রুপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা। এবারের শারদীয় দূর্গাপূজা আগামী ২০ অক্টোবর ৩ কার্ত্তিক মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ২৪ অক্টোবর ৭ কার্ত্তিক বিজয়া দশমী প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে পাঁচদিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এবছর দশভুজার আগমন ও প্রস্থান ঘটবে ঘোড়ায়
চড়ে। গেল শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে গিয়ে দেখা উপজেলার বিভিন্ন মন্ডপে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দূর্গা, লক্ষী, স্বরসতী, গণেশ ও কার্তিকের প্রতিমা। কোথাও বাকী রয়েছে শুধু রং করার কাজ। প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের হৃদয় ছুঁয়ায় প্রতিযোগিতা চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করাচ্ছেন পূজা কমিটির আয়োজকরা। উপজেলার বেগমাবাদ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় ৮ টি প্রতিমা তৈরীর কাজ করছে কারিগরেরা। এছাড়া গুনাইঘর গ্রামে ৫ টি, দেবীদ্বার পৌর দাসপাড়ায় ১ টি, চাপানগরে ২ টি, বড়আলমপুরে ২ টি, ছোটআলমপুর, এলাহাবাদ, পৌর পশ্চিম ফতেহাবাদ,রসূলপুর, ছেপারা,ভিংলাবাড়ি,ওয়েদপুরসহ অনেক মন্দিরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে।
পূজার শুরু হওয়ার কিছু দিন সময় বাকী থাকলেও দম ফেলার সুযোগ নেই প্রতিমা তৈরির কারিগরদের। বেগমাবাদ পোদ্দার বাড়ি ও রায় বাড়ির কারিগর রবীন্দ্রপাল বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতিমা তৈরিতে সুবিধা হয় এতে রং এর কাজ ভালো হয়, কিছু দিন পরেই রঙ এর কাজ ধরা হবে। তিনি আরও জানান,এ বছর কাঠ, খড় ও মাটি ও রংয়ের দাম বেশি তাই প্রতিমা তৈরিতে খরচ বেশি হচ্ছে।
অপরদিকে দেবী দুর্গাকে ঢাঁক, ঢোল, উলু আর শঙ্খ ধ্বনিতে বরণ করতে অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন ভক্তকুল। অনেকেই এ উৎসবকে ঘিরে শুরু করেছেন অগ্রীম কেনাকাটা। গংঙ্গামন্ডল রাজ ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়া ও রীয়া সাহা জানান- অনেক মেয়েরাই শারদীয় দূর্গা উৎসবে আনন্দ উপভোগ করতে তাদের পছন্দের জামা কাপড় কেনা কাটা করা শুরু করেছেন। দেবীদ্বার পৌর দাসপাড়ার রত্না আচার্য বলেন,পূজা উপলক্ষে মহিলারা শাড়ী ও গয়না কেনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন ,বারেরা গ্রামের শ্রী কার্তিক চন্দ্র দাসের কাছে পূজা উপলক্ষে পুরুষদের পছন্দের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন ধূতী ও পাজ্জাবির কথা। গুনাইঘ ধর বাড়ির নিখিল ধরের কাছে কারীগরদের পারিশ্রমিক অর্থ জানতে চাইলে তিনি বলেন- একটা প্রতিমা তৈরার করতে শুধু কারীগরদের জন্য গুনতে হয় ৬০- ৮০ হাজার টাকা। বেগমাবাদ গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ ননী গোপাল রায় কাছে এবারের পৃজায় তার পছন্দের ইচ্ছা কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন,ইশ্বরের সন্তুষ্টি অর্জন করাই তার মূল লক্ষ্য।
দেবীদ্বার থানা অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান আসন্ন শারদীয় দুর্গা উপলক্ষে শান্তিপূর্ন ভাবে পৃজা উযদাপন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিটিং করা হবে। আর শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা ও নিবির পর্যবেক্ষণ এবং মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান- সনাতন ধর্মাবলম্বীেদের শারদীয় দুর্গা পূজাকে শান্তিপূর্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশ রাখতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা প্রশাসনের টিম গঠন করে মনিটরিং রাখা হবে।