কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলা ২১২ টি গ্রামের মধ্যে দেবীদ্বার পৌরসভার চাপানগর, বিজুলীপান্জার, ছোটআলমপুর, ইকরানগরী,গুনাইঘর গ্রামের সবজি চারা ব্যবসায়ীরা ভাদ্র থেকে কার্তিক মাসের শেষ অবধি পর্যন্ত বাঁধাকপি,ফুলকপি,টমোটো ও মরিচের চারা উৎপান করে ব্যস্ত সময় পার করেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব এলাকার চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন সবজির চারা আবাদ করে দেশজুড়ে বিক্রি করছেন। তারা একই জমিতে বীজ অন্কুরোদগমের মাধ্যমে উৎপাদন করেন শীত ও গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন রকমের সবজির চারা। গুনগত মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলার কৃষকরা এসে কিনে নিচ্ছেন এখানকার উৎপাদিত সবজির চারা। এতে প্রতি মৌসুমে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। দিন দিন বাড়ছে চারা উৎপাদনকারী কৃষকের সংখ্যা। চারা উৎপাদনে অভিজ্ঞতা থাকায় এখানকার উৎপাদিত সবজির চারার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া,নরসিংদী, ফেনী, নোয়াখালী, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার কৃষকদের মাঝে। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চাপানগর গ্রামের পেশাদার চারা বিক্রেতা আনিসুর রহমান হাজারী চারা বিক্রি করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের হেলাল মিয়ার কাছে, এদিকে চারা কিনতে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার দৃর্গাপুর গ্রামের মো. বাছির মিয়া বলেন প্রতি বছর তিনি দেবীদ্বার চাপানগর থেকে কপির চারা ক্রয় করেন,এ বছর ৩০ শতাংশ জমির জন্য আড়াই হাজার সিরাজিকু জাতের ফুল কপির চারা ক্রয় করছেন ৪ হাজার টাকা দিয়ে, চারা বিক্রেতা মহিবুল হাসান হাজারীর কাছে আসেন, চারা ক্রয়কারী মো. মঙ্গল হোসেন কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলা থেকে। নরসিংদী জেলার রায়পুর উপজেলার মজিদপুর গ্রামের কৃষক মো. উজ্জ্বল বলেন ভালো উৎপাদিত জোরফুল জাতের ফুল কপির চারা ক্রয়ের জন্য তিনি চাপানগরের চারা বিক্রেতা কামরুজ্জামান সরকারের কাজ থেকে সতের’শ ফুলকপির চারা ১৭শ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন। ছোটআলমপুর গ্রামের চারা বিক্রেতা আবু তাহের, ইকরা নগরীর মো. হানিফ ও পশ্চিম ফতেহাবাদ গ্রামের মো. বাহাদুর বলেন চারা উৎপাদন করাই আমাদের পেশা, কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই, গুনগত মান রেখে চারা উৎপাদন করায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসেন সবজির চারা ক্রেতারা। দেবীদ্বার পৌর বিজুলীপান্জার গ্রামের চারা বিক্রেতা আব্দুর রহিমের কাছে চারা ক্রয়ের জন্য আসেন মুরাদনগর উপজেলার কামারচর গ্রামের রহুল আমিন, তিনি বলেন দুই হাজার ফুলকপি চারা ক্রয় করলাম ২ হাজার টাকা দিয়ে,এ এলাকার চারা উৎপাদনকারী মান ভালো থাকায় তাই এখানে আসা। বিজুলীপান্জার গ্রামের চারা বিক্রেতা আব্দুল মালেক জানান, জীবনের ৩০ বছর সময় পার করেছি সবজি চারা বিক্রি করে, ফুল ও বাঁধা কপির প্রতি চারার মূল্য কত দামে বিক্রি করা হয়,তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি ১ হাজার চারা হাজার টাকার উপরে বিক্রি করা হয়, সর্বোচ্চ ১৫’শ টাকাও বিক্রি করতে পারি এতে চারা উৎপাদনকারী কৃষক লাভবান হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায় জানান- বীজ থেকে কপির চারা উৎপাদন এ এলাকার চাষীরাদের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, এখানকার চারার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। কৃষকদের সবজির চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে পোকা মাকড় নিধন ও ভালো চারা উৎপাদনের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের পক্ষে সব সময় সর্বাত্মক পরামর্শ দেওয়া হয়।