নেকবর হোসেন: কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার সীমান্তবর্তী বুড়িচং উপজেলার পাহাড়পুরের হাসছে আউশ ধান। শ্রাবনের বাতাসে দোল খাওয়া ধান সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষকরা। প্রথমবারের মত জমিগুলোতে ভালো ফলন হওয়ায় স্থানীয় কৃষক পরিবারে বইছে আনন্দের ঢেউ। শুক্রবার বিকেলে মাঠ দেখতে
হাজির হয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। তাদের আশ্বাসে কৃষকরা এবার স্বপ্ন দেখছেন আসছে বছরও এই জমিগুলোতে আউশ ধান করবেন।শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় , কুমিল্লা বুৃড়িচং উপজেলার সীমান্তবর্তী আনন্দপুর বেলবাড়ি এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় কুমিল্লায় মাঠ দিবসের আয়োজন করে। মাঠ দিবসের আগে প্রথম বারের মতো চাষ করা আউশের জমি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।পতিত জমিতে আউশ আবাদ বৃদ্ধি র্কাযক্রমটির পরিকল্পনা ও সমন্বয়কারী অতিরিক্ত কৃষি অফিসার বানিন রায় অতিথিদের বেলবাড়ি মাঠে প্রথমবারের মতো চাষ হওয়া ৭০ বিঘা জমির আউশের মাঠ ঘুরে দেখান।
পরর্বতীতে অতিথিবৃন্দ মাঠের ব্রি ধান৯৮ জাতের নমুনা শস্য র্কতন ও মাঠ দিবসে অংশগ্রহণ করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বুড়িচং এর সহযোগিতায় ব্রি আঞ্চলিক র্কাযালয় কুমিল্লা। উক্ত মাঠ দিবসের আয়োজন করে। মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ব্রি আঞ্চলিক র্কাযালয় কুমিল্লা এর প্রধান ও সিএসও ড. মো. রফিকুল ইসলাম। মাঠ দিবসে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বুড়িচং উপজেলা র্নিবাহী অফিসার হালিমা খাতুন, বিএডিসি সুপারইনট্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বুড়িচং উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. ছামিউল ইসলাম, বক্তব্য রাখেন বাকশীমূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম সহ অন্যান্যরা।ব্রি এর বিজ্ঞানীবৃন্দ সহ দুই শতাধিক কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের র্সাবিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন র্উদ্ধতন বৈজ্ঞানিক র্কমর্কতা ড. মো. মামুনুর রশিদ।কৃষিবিদ বানিন রায় স্থানীয় কৃষকদের পক্ষে পাগলী খালের উপর স্লুইচ গেট ও খালের পাড় ঘেঁষে উৎপাদিত কৃষি পণ্য পরিবহণের জন্য রাস্তার দাবি জানান। বাস্তবায়িত হলে মাঠের ২০০ বিঘা জমিতে দুই ফসলের পরির্বতে চার ফসল ও ৫০ বিঘা জমিতে বছরব্যাপি সবজি চাষ সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।পাহাড়পুর গ্রামের বেলবাড়ি মাঠে আউশ আবাদ বৃদ্ধির র্কাযক্রমটি ব্রি আঞ্চলিক র্কাযালয় কুমিল্লা এর র্অথায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বুড়িচং র্কতৃক বাস্তবায়িত। ব্রি কুমিল্লার গবেষণা ও উন্নয়ন র্কাযক্রম জোড়দাড়করণ র্কমসূচির আওতায় ইতির্পূবে ৪০ জন কৃষককে ব্রি ধান৪৮ ও ব্রি ধান৯৮ জাতের বীজ সহায়তা, ব্রি হাইব্রিড ধান৭ জাতের ২ টি প্রর্দশনী, ৬০ বিঘা জমির ২০ কেজি করে ইউরিয়া সার ও ৫৪ জন কৃষক-কৃষানীর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। সকল র্কাযক্রম তদারকি করেন উপসহকারি কৃষি অফিসার মো. সাহেদ হোসেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বুড়িচং উপজেলায় আউশ আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে। পতিত জমিতে আউশ আবাদ বৃদ্ধির নানা র্কাযক্রম গ্রহণের ফলে এটি সম্ভব হয়েছে বলে জানা যায়। তাছাড়া, প্রায় প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে প্রচলিত ব্রি ধান৪৮ এর চেয়ে অধিক ফলনশীল ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৯৮ ও বিনাধান-২১ এর বীজ। এখন র্পযন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিঘা প্রতি ১৬-১৭ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে জাত গুলোতে। এ বছর আউশে বাম্পার ফলন প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ।