কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ঝর্ণা আক্তার (১৮) নামে এক নববধূকে নিজ ঘরে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যায় নাঙ্গলকোট পৌরসভার কেন্দ্রা গ্রামের চা দোকানদার আব্দুল জলিলের ঘরে ঢুকে দুবৃত্তরা তার সদ্য বিবাহিত কন্যা ঝর্ণা আক্তারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পাশের ঘরের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী ঘরের ভিতরে মারামারির শব্দ শুনে দোকানে গিয়ে আব্দুল জলিলকে খবর দেয়। আব্দুল জলিল ঘরে এসে দেখে তার মেয়ের মাথার মগজ ও রক্তে ঘর ভেসে গেছে। এসময় আব্দুল জলিলের শোরচিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ঝর্ণাকে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গত ১৭দিন পূর্বে উপজেলার জোড্ডা গ্রামে আপন ফুফাত ভাই আব্দুল্লার সাথে মোবাইলে বিয়ে হয় ঝর্ণার। দোকানদার আব্দুল জলিলের স্ত্রী গত কয়েক বছর পূর্বে মৃত্যু বরণ করেন। আব্দুল জলিলের ৩ কন্যা ও ২ পুত্রের মধ্যে ঝর্ণা ছিলেন চতুর্থ। গত কয়েকদিন পূর্বে ঝর্নার মোবাইল চুরি হয়। এনিয়ে ঝর্ণার ভাবি ও পাশের বাড়ির বান্ধবীর সাথে ঝগড়া হয়। এর জেরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা পিতা আব্দুল জলিলের। নিহতের পিতা আব্দুল জলিল বলেন, জয়নাল ভাইয়ের স্ত্রী ঘরে আওয়াজ শুনে আমার কাছে ছুটে আসে। আমি বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে। রক্তে পুরো ঘর ভেসে গেছে এবং তার মাথার মগজ পাশেই পড়ে আছে। গত কয়েকদিন যাবৎ আমার মেয়ের মোবাইল চুরি হওয়া নিয়ে আমার পুত্র শাহীনের স্ত্রী কলি আক্তার ও মেয়ের বান্ধবী পাশের বাড়ির খুকির সাথে বাক বিতন্ডা হয়। মোবাইল চুরির ঘটনায় শাহীনের স্ত্রী কলি ও মেয়েরা বান্ধবী খুকি একে অপরকে দোষারোপ করে। এনিয়ে খুকি ও তার পরিবারের লোকদের সাথে আমার পুত্র বধূর ঝগড়া হয়। পরে মোবাইল পুনঃরায় আমাদের ঘরে কে বা কাহারা রেখে যায়। আমার পুত্র বধূ শুক্রবার আমার ছেলে-সহ তার পিতার বাড়ী উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামে বেড়াতে যায়। আমার স্ত্রী জীবিত না থাকায় ও তার ভাবি বেড়াতে যাওয়ায় ঘরে মেয়েটি একা ছিল। আমার মনে হয় এ মোবাইল চুরির ঘটনাই আমার মেয়ের জন্য কাল হয়েছে। আমার মেয়েকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত আমি তাদের ফাঁসি চাই। নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।