মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া ২ বাংলাদেশীর মরদেহ দেশে এনে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসীদের সহযোগীতায় কামাল হোসাইন ও দুলালের মরদেহ দেশে পাঠানো হয়। শনিবার (১৬ মার্চ) রাত ১১টায় ঢাকা শাহজালাল বিমান বন্দরে আনার পর এ্যাম্বুল্যান্স করে রোববার ভোর সাড়ে ৫টায় নিজ গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ পূর্বপাড়া (উটখাড়া) আনা হয়। নিহতদের মরদেহ আসার পর কফিনের পাশে স্বজনসহ এলাকার শত শত মানুুষের আর্তনাদে আকাশ ভারি হয়ে উঠে। প্রবাসী কল্যান সংস্থার পক্ষ থেকে লাশের গাড়িতে আনা নিহত কামাল ও দুলালের মরদেহ দাফনের জন্য স্বজনদের হাতে জন প্রতি ৩৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
রোবার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টায় এলাহাবাদ পূর্বপাড়া উটখাড়া মাজার সংলগ্ন ‘আল-আকসাদ জামে সমজিদে’ একসাথে কামাল ও দুলালের জানাজা শেষে নিজ নিজ পারিবারিক গোরস্তানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাযার নামাজ পড়ান এলাহাবাদ পূর্বপাড়া উটখাড়া মাজার সংলগ্ন ‘আল-আকসাদ জামে সমজিদে’র ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. দেলোয়ার হোসেন। উল্লেখ্য গত ৩ মার্চ রাতে মালয়েশিয়ার ‘টেনটিরকাজাং এলাকার কেটিএমপুনকাক উতামা জেডহিল ট্র্যাকে সন্ত্রাসীদের হাতে বাংলাদেশী কামাল হোসাইন(২২) এবং দুলাল(৩৩) নামে ২ যুবক নিহত হন। নিহতরা কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের এলাহাবাদ (উটখাড়া) গ্রামের পূর্বপাড়ার লিটন মম্বারের বাড়ির মো.শহীদের পুত্র কামাল হোসাইন(২২) এবং প্রতিবেশী মৃত: হাবিবুর রহমানের পুত্র দুলাল (৩৩)।
মালয়েশিয়ায় নিহত দুই বাংলাদেশী দুলাল ও কামাল প্রায় ১ বছর ৪ মাস পূর্বে ভাগ্যের চাকা ঘুড়াতে কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় যান। ওখানে তারা কাজ না পেয়ে কিছুদিন পালিয়ে থেকে একটি ওয়ার্কশপে গোপনে কাজ শুরু করেন। ঘটনার দিন রাতে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে একদল সন্ত্রাসীর হাতে ওরা ২জন ও ১জন রোহিঙ্গাসহ ৩ জন নিহত হন। প্রথমে স্বজনদের কাছে মৃত্যুর সংবাদটি আসে ট্রেনে কাটা পরে মারা গেছে। পরে জানতে পারেন জুয়া খেলার টাকা লেনদেন নিয়ে দালাল চক্রের সহযোগীতায় ভাড়াটে একদল তামিল সন্ত্রাসীর সহায়তায় তাদের হত্যা করে।
নিহত কামাল হোসেনের বড় ভাই সেলিম ও জামাল জানান, গত ৩ মার্চ রাতে ট্রেনে কাটা পরে ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদটি পাই। পরে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পারি আমার ভাই ও প্রতিবেশী দুলালকে যে দালালের মাধ্যমে পাঠিয়েছিলাম ওই দালাল চক্রই (ওমর, হাসান, মোহাম্মদ আলী), অনলাইনে জুয়া খেলার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরেই একদল তামিল সন্ত্রাসী তাদের হত্যা করে মালয়েশিয়া একটি রেলষ্ট্যাশনের পাশের জঙ্গলে ফেলে রাখে।
Notifications