ভৈরবে ট্রলারডুবিতে দেবীদ্বারের একই পরিবারের ৫ জনের মধ্যে নিহত স্ত্রী ও সন্তানসহ পাশা পাশে কবরে দাফন পুলিশ কনস্টেবল সোহেলের। সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় দেবীদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ফতেহাবাদ গ্রামের খালেক মেম্বারের বাড়িতে এক শোকাবহ পরিস্থিতিতে তাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়। ওই পরিবারের বেঁচে যাওয়া কনস্টেবল সোহেলের ভাগ্নি মারিয়া আক্তার(১৪) জীবন বাচাঁতে প্রাণপন চেষ্টাকালে একটি নৌকা এসে তাকে উদ্ধার করায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় সে। গত শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিহত পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা(৩৫) এর স্ত্রী মৌসুমি আক্তার(২৯)কে শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে উদ্ধার পূর্বক গ্রামের বাড়িতে এনে রোববার সকালে দাফন সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তীতে রোববার (২৩মার্চ) বিকেলে কণ্যা মাহমুদা আক্তার ইভা(৬)কে এবং সোমবার সকালে কনস্টেবল সোহেল রানা(৩৫) ও তার পুত্র রাইসুল ইসলাম(৪)কে উদ্ধার করে সোমবার বাদ জোহর ভৈরব হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির সামনে প্রথম জানাযা ও নিজ গ্রামের বাড়িতে সন্ধ্যা ৭টায় দ্বিতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে একই সারিতে দাফন সম্পন্ন হয়। এসময় দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ নয়ন মিয়া ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান মাসুদ ও ভৈরব হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে জানাযার দাফন-কাফনের জন্য ২০ টাকা প্রদান করেন। নিহত পুলিশের কনেস্টবল সোহেল রানা ফতেহাবাদ গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুল আলীমের জেষ্ঠ পুত্র। তিনি কিশোরগঞ্জের ভৈরব হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।
ওই পরিবারের বেঁচে যাওয়া পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার ভাগ্নি মারিয়া আক্তার(১৪) এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভৈরব মামার বাসায় বেড়াতে যান। ভাগ্নিকে নিয়ে ট্রলার ভ্রমনে ঘুরতে বের হয়েছিলেন। মারিয়া আক্তার(১৪) জানায়, ট্রলার ডুবির সময় আমি ট্রলারের জানালা দিয়ে বের হওয়ার সময় তার মামাতো ভাই বোন ২ জনকে দু’হাতে ধরে বের হলেও প্রথমে বোন ইভা হাত থেকে ছুটে যায় পরে ভাই রাইসুলকে ধরে রাখতে পারিনি। কারন আমি সাতার না জানার কারনে নিজেই বাঁচার চেষ্টা করি। এসময় ভাগ্যক্রমে একটি নৌকা এসে আমাকে উদ্ধার করে। উল্লেখ্য গত শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মেঘনা নদীর রেলসেতু এলাকা থেকে নৌকা নিয়ে ভ্রমণে বের হন কনেস্টবল সোহেল, তার স্ত্রী, পুত্র, কণ্যাসহ পরিবারের ৪ সদস্য। এসময় সোহেলের পরিবারের ৪ সদস্যসহ ওই ট্রলারে ২১ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রলার (নৌকা) ভ্রমনকালে কিছুদূর যেতেই এক যাত্রীর অনুরোধে ট্রলারের মাঝি হাল ছেড়ে ছবি তুলতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী বাল্কহেড নৌকাকে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই নৌকাটি ডুবে যেয়ে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিওটিএ) ডুবুরি দলের ৪৪ ঘন্টা অভিযানে ১১জন বেঁচে গেলেও কনস্টেবল সোহেলের পরিবারে ৪ সদস্যসহ ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেন।