নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা সদরের ব্যাস্ততম ও বৃহত বাজার হিসাবে পরিচিত নিউ মার্কেট এলাকার পান বাজারের একটি বৈদ্যুতিক খুটির পাশের নারিকেল গাছের পাতা থেকে লাগা আগুনে গাছের অগ্রভাগে আগুন লেগে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
বুধবার দুপুরে এই অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত হলে মুহুর্তেই এলাকার কয়েক শত ব্যাবসায়ীসহ আগত ক্রেতা ও পথচারিদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা তাৎক্ষনিক দেবীদ্বার বিদ্যুৎ অফিস ও মুরাদনগর ফায়ার সার্ভিস অফিসে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে প্রায় আধাঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
স্থানীয় একাধিক ব্যাবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎ অফিসের অবহেলায় আজকের এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, তারা এরকম একটি ব্যাস্ততম এলাকায় গাছের পাশ ঘেষে লাইন নির্মাণ করার কারনে প্রায়ই অগ্নিকান্ডে ব্যাপক দূর্ঘটনা ঘটছে এবং জান-মালেরও ব্যপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। তাছাড়া সামান্য বাতাস, ঝড় বা বৃষ্টির কারনে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকে। কোথাও কোথাও ৪/৫ দিনেও বিদ্যুৎ সংযোগ থাকেনা। জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ঝড়ে গাছ পড়ে তার ছিড়ে গেছে, বিদ্যুতের খুটি উপড়ে গেছে, ট্রান্সফর্মার জ্বলে গেছে বা চুরি হয়ে গেছে। সেই ট্রান্সফর্মারের গচ্ছা দিতে হয় বিদ্যুৎ গ্রাকদের।
স্থানীয়রা দাবী করেন, বিদ্যুৎ বিভাগের অব্যবস্থাপনা, অবহেলা, নজরধারীর অভাবে এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে দায়সার কাজ করা, অপরিকল্পিতভাবে গ্রাহকদের বাসা, বাড়ি, দপ্তর, কারখানা, কৃষি জমির ডিপকলে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বৈদুতিক সংযোগ দেয়ার কারনে এসব দূর্ঘটনা ঘটছে। প্রায়ই উপজেলার কোন না কোন এলাকার বাড়ি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ছে সম্পদ, জীব-জন্তু, পশু-পাখী এমনকি মানুষ। নিঃস্ব হচ্ছে অগ্নিদগ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো।
স্থানীয় স্বর্ন ব্যবসায়ী বিজয় দাস বলেন, আগুন লাগার সাথে সাথে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাবসায়ীরা যার যার দোকান নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। যথা সময়ে দমকল বাহিনীর লোকজন দ্রুত উপস্থিত হওয়ার কারনে আগুন নিয়ন্ত্রনে এসেছে। তবে আর একটু দেরি হলে এখানে কয়েক কোটি টাকার সম্পদসহ প্রাণনহানীর মত দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
এব্যাপারে মুরাদনগর ফায়ার ষ্টেশনের ষ্টেশন অফিসার মোঃ নুরুল হুদা জানান, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। এই আগুন যথা সময়ে নিয়ন্ত্রন না করতে পারেলে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড এবং বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হবার সম্ভাবনা ছিল।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত দেবীদ্বার পল্লি বিদুৎ অফিসের লাইনম্যান মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাৎসরিক গাছকাটা চলমান আছে,ইতিমধ্যে এই গাছটিও আমরা ছাটাই করেছি। তবে এই খুটিতে নতুন লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা এই গাছটি যেন আর কোন দুর্ঘটনার কারন না হয়,সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিব। বিষয়টি আপনাদের অবহেলার কারনে হয়েছে কিনা এ প্রশ্নে জবাবে কোন মন্তব্য করেনি।
এ ব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি চান্দিনা-১ এর দেবীদ্বার কার্যালয়ের কর্মকর্তা প্রকৌশলী দিপক কুমার সিংহ এ দূর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি এ কর্মস্থলে নতুন এসেছি। দু’একদিনের মধ্যে পৌর এলাকার বিদ্যুৎ লাইনের পাশের সমস্ত গাছের ডাল পালা কাজ শুরু করব। একই নিয়মে আগামী ঝর-বৃষ্টির আগেই উপজেলার সমস্ত বিদ্যুৎ লাইন নিরাপদ করে দেব।