কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় পবিত্র ঈদ উল আযহাকে ঘিরে অন্যান্য বছর কামার পল্লীতে তুমুল ব্যস্ততা চোখে পড়লেও এবার দৃশ্যপট কিছুটা বদলে গেছে। কাজের চাপ নেই, নেই ক্রেতার সমাগমও। তাই হতাশ কামার পেশায় জড়িত লোকজন। ঈদ আসতে মাত্র সপ্তাহখানেক বাকি থাকলেও অবসর সময় কাটছে তাদের। কুমিল্লার চকবাজার ও রাজাপাড়া কামার পল্লী ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
কুমিল্লার চকবাজারে ৩৫টিরও অধিক দোকান নিয়ে গড়ে উঠেছে কামার পল্লী। সারাবছরই কুমিল্লা শহর ও এর আশপাশের এলাকার মানুষজন ছুরি, বটি, দা, টাক্কল কিনতে ও শান দিতে এখানে ভিড় জমান। তবে ঈদ সামনে রেখে কামার পল্লীতে ক্রেতাদের ভিড় তেমন একটা চোখে পড়েনি। অল্প কয়েকজন ক্রেতা আসছেন, তাদের কেউ কেউ ছুরি-বটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে এসেছেন পুরনো দা ছুরি শান দেওয়ার জন্য।
কামার পাড়ায় ছুরি, বটি কিনতে আসা লোকজন বলছেন, আগের তুলনায় দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। আর বিক্রেতারা বলছেন, ছুরি চাকু টাক্কল বটি দা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে এসব পণ্যের দাম। আগে এক বস্তা কয়লার দাম ২ শ’ থেকে আড়াই শ’ টাকা থাকলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ শ’ টাকা। এছাড়াও লোহার দামও বেড়েছে কয়েকগুণ।
কামার পল্লীর প্রবীণ ব্যবসায়ী বলাই কর্মকার বলেন, বাজারে লোকজনের সমাগম একেবারেই কম। তাই বেচা-বিক্রিও কম। অন্যান্য সময়ে যে পরিমাণ বিক্রি হতো- ঈদের আগে যেনো তা আরো কমে গেছে। একেবারেই কাজ নেই, তার বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে।
আরেক দোকানি লিটন কর্মকার বলেন, সবকিছুরই দাম বেড়েছে। দা-ছুরি বানাতে যে লোহা-কয়লা লাগে তার দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ফলে আমাদেরকেও দা ছুরি বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে যে ছুরি ৭০ টাকায় বেচতাম, তা এখন ১০০ টাকা। ৪০০ টাকার টাক্কল এখন বেড়ে ৬ শ’ সাড়ে ৬ শ’ টাকা হয়ে গেছে। ফলে অনেক ক্রেতা এসে ফিরে যাচ্ছেন। তারপর বেচা-কেনা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তবে যতোটা আশা করেছিলাম, সেরকম হচ্ছে না।
কুমিল্লার বিবির বাজার এলাকা থেকে কোরবানির গরুর হাড্ডি কাটতে টাক্কল বানাতে এসেছেন সিএনজি অটোরিকশা চালক সেলিম মিয়া । তিনি বলেন, টাক্কল কিনতে এসেছিলাম। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম বানিয়ে নিয়ে যাই, পণ্যটা মজবুত পাওয়া যাবে। দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবকিছুরই দাম বেড়েছে। ছুরি-কাচির দাম বাড়চে এটাই স্বাভাবিক।