কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার আদর্শ নগর উপজেলার দুর্গাপর ইউনিয়নের সাজ্জাদ ভূইয়া বিজয় ও নুরুন্নাহার সামিয়া। দুজনই এ এলাকার বা১সিন্দা। পরিবারের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেছেন সাত মাস আগে। সামিয়ার বাবা বিয়ে মেনে না নিয়ে বিজয়ের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দিয়েছেন। ওই মামলায় তিনি জেল খাটেন এক মাস সাতদিন। তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হচ্ছে।
এসব ঘটনায় রোববার (২৪ জুলাই) রাতে স্বামী-স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসে হয়রানি বন্ধ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় তারা একসঙ্গে আত্মহত্যা করবেন বলে ঘোষণা দেন।
পরদিন সোমবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০টায় দৌলতপুর এলাকায় পুলিশ নিয়ে মেয়েকে আনতে জান মাসুদুর রহমান। এ সময় বাবার বাড়ি যাবেন না বলেই স্বামী-স্ত্রী দুজনই সবার উপস্থিতিতে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
সাজ্জাদ ভূইয়া বিজয় আদর্শ সদর উপজেলার দুর্গাপর ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকার ফরহাদ আহমেদ ভূইয়ার ছেলে। তার স্ত্রী নুরুন্নাহার সামিয়া একই ইউনিয়নের বলরামপুর এলাকার ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানের মেয়ে।
সাজ্জাদ ভূইয়ার বাবা ফরহাদ আহমেদ ভূইয়া জানান, তার ছেলে বিজয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মাসুদুর রহমানের মেয়ে সামিয়ার। তারা দুজনই পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে করেন। এরই মধ্যে সামিয়ার ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তার পরিবার বিজয়ের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করে। ওই মামলায় বিজয় এক মাস ৭ দিন জেল খাটেন। সামিয়া আদালতে হাজির হয়ে বিজয়ের সঙ্গে পালানোর কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। পরে আদালত বিজয়কে জামিন দিয়ে সামিয়াকে তার বাবার কাছে হস্তান্তর করেন। ২৪ মে বিজয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
ফরহাদ আহমেদ বলেন, এরপর থেকে সামিয়ার বাবা তাকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করলে রোববার (২৪ জুলাই) সে বিজয়ের কাছে চলে আসে। পরে সামিয়ার বাবা তাকে ফোন করে শাসালে তারা উভয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। সকাল ১০টায় আমার বাড়িতে পুলিশ নিয়ে এসে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মাসুদুর রহমান। এ সময় বাবার বাড়িতে যাবে না বলেই তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই সবার উপস্থিতিতে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সকালে দুজনকে ছাড়পত্র দিয়ে ছুটি দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সামিয়ার বাবা মাসুদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে যেহেতু আদালতে মামলা চলছে, তাই পুলিশের কিছু করার নেই। তারপরও আমরা বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করছি।