নেকবর হোসেন: কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে জুমার নামাজে খুতবায় মাইক ব্যবহার নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ জেরে একে অপরকে আসামি করে থানায় মামলা করলে ওই ঘটনায় দুই পক্ষের ৩ জনকে
আটক করে থানা পুলিশ।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা,২টি বাসতবাড়ি,দোকানপাট ও যানবাহনে হামলা- ভাংচুর নগদ টাকা লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২৭ আগস্ট)দিনভর দুই দফায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নে কুরন্ডী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বরিবার (২৮ আগস্ট) সকালে মো.ইউনুছ মিয়া বাদী হয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সবুজ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানা মামলা দায়ের করেন অপর দিকে মো.আক্কাস আলী ২১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করলে
রবিবার দিবাগত রাতে পুলিশের অভিযানে উভয়পক্ষের ৩ জনকে আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশ।
মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, বিগত ইউপি নির্বাচনে সাবেক ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম ও নির্বাচিত সদস্য সবুজ মিয়ার মাঝে জয় পরাজয় নিয়ে দ্বদ্ব শুরু হয়।
নির্বাচনী প্রতিহিংসার জের ধরে ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া গত কুরবানীর ঈদের নামাজ ঈদগায়ে গিয়ে পরতে বাধা দেয় নূরুল ইসলামের পরিবারের লোকজনকে। তখন তারা ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করতে গেলে অত্র সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ জাহানের অনুমতি নিলেও সবুজ মিয়ার লোকজন মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে তার কোন উপায় না পেয়ে একই এলাকার কুরন্ডী ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় ঈদের নামাজ আদায় করে নুরুল ইসলামের পরিবার।
তার পর থেকে সেখানেই জুম্মাসহ সকল প্রকার নামাজ আদায় করেন নূরুল ইসলামের পরিবার। মাদ্রাসা ও মসজিদ কাছাকাছি হওয়ায় গত ১৯ আগষ্ট জুমার খুতবাকে কেন্দ্র করে আবারো দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির লক্ষে শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) রাতে দু’পক্ষের লোকজন নিয়ে বসেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বাহার খাঁন। সেখান থেকে ফেরার পথে দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
তারই জের ধরে শনিবার সকাল ৭টায় দিনভর দুই দফায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ জাহানের নেতৃত্বে ইউপি সদস্য সবুজ ও তার লোকজন নূরুল ইসলামের ভাই ইউনুছের বাড়ি, দোকান ও কুরন্ডী ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে তার বাসতবাড়ি থেকে ৫ লক্ষ টাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট পাট করেন বলে অভিযোগ করেন।
এসময় নূরুল ইসলামের পরিবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দেশিয় অস্ত্রের আঘাতে ১০ জন আহত হয়। আহতরা মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান বাহার খান বলেন,নির্বাচন থেকেই দুই মেম্বারের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। গতকাল বিকালে স্থানীয় ভাবে বসে সমাধান করতে পারিনি। আজ আমি এলাকায় নেই। শুনছি তারা মারামারি করেছে।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন,খুতবার সময় মাইক ব্যবহান নিয়ে দুই পক্ষে মাঝে বিরোধ চলমান রয়েছে এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে মারামারি হয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন আছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মোঃ আলাউদ্দিন ভূইয়া জনি বলেন,উভয়পক্ষের সাথে আমরা কথা বলেছি,ঘটনাটি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।