নেকবর হোসেন: কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বরল গ্রামের আয়েশা আক্তার। স্বামী থাকেন প্রবাসে। সেই আয়েশার মোবাইলে কল করেন জিনের বাদশা। জানান, জিনের বাদশার কাছে ৩০ ভরি সোনার অলংকার দিলেই আয়েশাকে আর এ জীবনে টাকা-পয়সা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। এমন প্রলোভন এড়াতে পারেননি আয়েশা। নিজের তো বটেই, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকেও সংগ্রহ করেছেন অলংকার। তুলে দিয়েছেন জিনের বাদশার প্রতিনিধির কাছে। এরপর থেকেই লাপাত্তা সেই জিনের বাদশা। আয়েশা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
গত সেপ্টেম্বরের এ ঘটনার প্রতিকার পেতে শেষ পর্যন্ত আয়েশা দ্বারস্থ হন পুলিশের। ৫ সেপ্টেম্বর মামলা করেন লালমাই থানায়। সেই মামলার তদন্তে নেমে জিনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৩০ ভরি সোনার অলংকার হাতিয়ে নেয়া সেই চক্রের তিন সদস্যকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করেছে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার তাদের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মো. পারভেজ (২২), মো. আফজল হোসেন (৩০) ও আরিফ মিয়া। তাদের সবার বাড়ি গাইবান্ধার জেলার গোবিন্দপুর উপজেলার রামনাথপুর গ্রামে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, নিজ নিজ বাড়ি থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এসআই জাহাঙ্গীর বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে চলতি সপ্তাহে মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। মামলার তদন্তের ভার পড়ে আমার ওপর। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর গ্রাম থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জিনের বাদশা চক্রের সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। তবে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও অনেকে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা এই প্রতারক চক্রের সদস্য হিসেবে মাঠে কাজ করেন। প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া সোনার অলংকার তারা চক্রের মূল ব্যক্তিদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এগুলো মূল হোতারা বিক্রিও করে দিয়েছেন।