কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম.রুহুল আমিনের গাড়ি বহরে হামলা,গাড়ি ভাঙচুর ও নেতা-কর্মীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে নিজ দলেরই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামল হলে রোববার রাত সাড়ে ৮ টায় মামলায় এজহারভুক্ত প্রধান আসামী ইয়াকুব(৩৪) কে গ্রেফতার করেন থানা পুলিশ।গ্রেফতারকৃত আসামী ইয়াকুব (৩৪) গৌরিপুর পেন্নাই গ্রামের মৃত:আব্দুল গাফফারের ছেলে।
দলীয় সৃত্রে জানা যায় শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় দাউদকান্দি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের রফারদিয়া গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে সম্ভুরদিয় বাজার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় রোববার(২৯ জানুয়ারী)দাউদকান্দি উপজেলার কদমতলী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এ,কে,এম রেহান উদ্দিনের পুত্র মো.সোহেল রানা(৩৪) বাদী হয়ে ৮ জন এজহারভুক্ত ও অজ্ঞাতনামা ২০/২৫জনসহ ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে দাউদকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ২৬।
মামলার বাদী মো.সোহেল রানা জানান,ওই অনুষ্ঠনটি ছিল আওয়ামীলীগ কুমিল্লা (উঃ) জেলা কমিটির সদস্য জাকির নেওয়াজ সোহেলের ভাতিজা মেহেদী হাসানের বিয়ের অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান থেকে শনিবার(২৮ জানুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিয়ে বাড়ি থেকে গাড়ি বহর নিয়ে ফেরার পথে দৌলতপুর ইউনিয়নের সম্ভরদিয়া বাজার(ইউ চত্তরে)পৌঁছার পর অভিযুক্তরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রড গ্যাস পাইপ, লাঠি,হকি ষ্টিক নিয়ে আমাদের গাড়িবহরের গতি রোধ করে বশির মিয়াজীকে খোঁজ করে এবং আমাদের অকথ্যভাষায় গালমন্দ করতে করতে ২/৩টি গাড়ি পিটিয়ে ভাংচুর করে। ভাংচুর হওয়া গাড়ির প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। হামলা চলাকালে আওয়ামীলীগ কুমিল্লা(উঃ) জেলা সভাপতি মু রুহুল আমিনের গাড়িবহরে ছিলেন দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর(অবঃ)মোহাম্মদ আলী সুমন,কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ড.আব্দুল মান্নান জয়,কুমিল্লা (উঃ) জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক বাবু বাসু দেব ঘোষ, কুমিল্লা (উঃ)জেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জিএস সুমন,দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসান হাবিব লিল মিয়া, সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন সিকদার,দাউদকান্দি পৌর যুবলীগের সদস্য মুরাদ চৌধূরী সুমন,খাজা প্রধান,দাউদকান্দি পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাউছার হোসেন বাবুসহ বেশ কিছু নেতা-কর্মী। মামলায় এজহারভুক্ত অন্যরা হলেন,চৌদলী পাড়া গ্রামের সালাউদ্দিন চৌধূরীর পুত্র ইমরান(৩২),পিতা অজ্ঞাত আল আমিন(৩১),মারুফ(২৩),আশরাফুল (২৯),এনামুল (২৫),বাউরিয়া গ্রামের পিতা অজ্ঞাত সুজন(৩১),পালের বাজার গ্রামের পিতা-অজ্ঞাত মহসীন(৩৪)সহ ৮জন।
জানা যায়- গত ইউপি নির্বাচন চলাকালে দৌলতপুর নির্বাচনী প্রচারনায় কুমিল্লা (উঃ) জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বশিরুল্লাহ মিয়াজী প্রতিপক্ষের প্রার্থীর সমর্থকদের অকথ্যভাষায় গালমন্দ করেছিলো। এ ঘটনায় এলাকার ক্ষুব্ধ ছেলেরা আওয়ামীলীগ কুমিল্লা(উঃ) জেলা সভাপতি মু.রুহুল আমিনের গাড়ি বহরে কুমিল্লা (উঃ) জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বশিরুল্লাহ মিয়াজী থাকার সংবাদে উত্তেজিত ছেলেরা খুঁজতে যায় এবং গাড়ি বহরে হামলা ও ভাংচুর করে।
এ ব্যপারে কুমিল্লা (উঃ) জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বলেন,বিগত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হামলা হয়। দাউদকান্দি থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মহিউদ্দিন সিকদারকে খুঁজতে যেয়ে তারা ২/৩টি গাড়ি ভাংচুর করে। নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে মহিউদ্দিন সিকদারের উপর হামলা করতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা (উঃ)জেলা আওয়ামীলীগ সিদ্ধান্ত নেব।
হামলার শিকার কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মু.রুহুল আমিন জানান,দাউদকান্দির দৌলতপুর ইউনিয়নে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বসির উল্লাহ মিয়াজীকে খোঁজার জন্য স্থানীয় কয়েকজন ধাওয়া করে। না বুঝে আমার গাড়ি ও আমার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
রোববার রাত সাড়ে ৮ টায় দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোা.আলমগীর ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কুমিল্লা (উঃ)জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির গাড়িবহরে হামলা,নেতা-কর্মীদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় প্রধান আসামী ইয়াকুব (৩৪) কে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকীদের গ্রেফতার চেস্টা অব্যাহত আছে।