কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় ২৯টি চোরাই গাড়িসহ গাড়ি চোরচক্রের ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার(১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে কোতোয়ালি থানা এলাকা এবং বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।কুমিল্লায় ২৯ টি চোরাই গাড়িসহ চোর চক্রের ১৮ জন আটক
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-চোরচক্রের মূল হোতা কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার আড়াইওড়া গ্রামের মৃত মনোহর আলীর ছেলে কাউসার আলী খলিল (৪৫),একই গ্রামের ওহাব কাজীর ছেলে মো. কাইয়ুম (৪২), মুক্তার হোসেন মুন্নার ছেলে সাজিদ হোসেন (২০), ভাটপাড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে নাজমুল হোসাইন (১৯), হারং গ্রামের আলম মিয়ার ছেলে আবু কাউসার (৩৫), বদরপুর গ্রামের মো.হোসেনের ছেলে পিয়াস (৩৩), আড়াইওড়া গ্রামের মৃত দিদার বক্সের ছেলে জহির মিয়া (৪০), মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের হান্নান মিয়ার ছেলে জামশেদ হোসেন।
সাইফুল আলম জাহাঙ্গীর (৪৫), হৃদয় হাসান (১৯), শুক্কুর আলী (২৩), রিপন মিয়া ওরফে আবদুল আলিম (২৭), চান্দিনার শ্রীমন্তপুর গ্রামের মোহর আলীর ছেলে সাইফুল (৩২),আল আমিন (২৪),মজিদ (৩০)তাজুল ইসলাম ও ওমর ফারুক (২৮)। এ চক্রের কয়েকজন সদস্য এখনো পলাতক রয়েছেন।কুমিল্লায় ২৯ টি চোরাই গাড়িসহ চোর চক্রের ১৮ জন আটক
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুমিল্লা নগরীর শাকতলায় র্যাব-১১ সিপিসি ২ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
তিনি জানান, শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জেলার কোতোয়ালি থানা এলাকার পালপাড়া এলাকার খলিলের গ্যারেজে একটি চোরাই কাভার্ডভ্যান রয়েছে মর্মে তথ্য পায় র্যাব। পরে ওই গ্যারেজে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে কাভার্ডভ্যানটি কেটে যন্ত্রাংশ আলাদা করার সময় চক্রের মূল হোতা, গ্যারেজ মালিক খলিলসহ মোট ৮ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও কয়েকজন সদস্যের নাম জানায়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই রাতেই কোতোয়ালি থানা এবং বুড়িচংয়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি কাভার্ডভ্যান, ২টি চোরাই মোটরসাইকেল,২৬টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ অসংখ্য যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান,গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। তারা মূলত ৩টি গ্রুপের সমন্বয়ে গাড়ি চুরি, যন্ত্রাংশ আলাদা এবং বাজারজাত করত। ১ম গ্রুপের সদস্যরা যাত্রীবেশে কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে গাড়িগুলোকে টার্গেট বানাত। পরে সময় সুযোগ বুঝে চালককে জিম্মি করে অথবা চালকের অনুপস্থিতিতে সেগুলো চুরি করত। চোরাই গাড়িগুলো যেন সহজে কেউ খুঁজে না পায় সেজন্য এক এলাকায় চুরি করে অন্য এলাকায় নিয়ে যেত। ২য় গ্রুপের কাজ ছিল অন্য এলাকায় নিয়ে ওই এলাকার গ্যারেজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করে গাড়ির যন্ত্রাংশ কেটে,রং লাগিয়ে গাড়ি পরিবর্তন করে রূপ দিতে ভিন্ন গাড়িতে। এ গ্রুপের সদস্যরা প্রতি গাড়িতে জনপ্রতি ৫-১০ হাজার টাকা সম্মানি পেত। ৩য় গ্রুপের কাজ ছিল গাড়িগুলো রূপ পরিবর্তন হয়ে গেলে সেগুলো ৩০-৫০ হাজার টাকায় কিনে গ্রাহকের কাছে ৯০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা দামে বিক্রি করত। গাড়ি চুরির এ চক্রটি ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রায় ১০ বছর যাবৎ এমনভাবে চুরি এবং চোরাই গাড়ির ব্যবসা করে আসছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানা এবং বুড়িচং থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।